Monday, September 26, 2022

 নবদ্বীপ বিশেষ দুর্গাপূজা - পর্ব ১

🌻


🌷নবদ্বীপ হরিসভা মন্দিরের হরগৌরী🌷
মণিপুর রাজা ভাগ্যচন্দ্রের পরে নবদ্বীপে প্রকাশ্যে মহাপ্রভুর বিগ্রহ গড়ে সেবাপুজোর ব্যবস্থা করেছিলেন প্রখ্যাত নৈয়ায়িক ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন মশাই।
তাঁর হরিসভা মন্দিরে প্রায় দেড়শো বছর ধরে দুর্গা পুজোর অষ্টমীর দিনে ব্যতিক্রমী এই পুজো হয়ে আসছে। ঘরোয়া ভঙ্গিতে বসে থাকা শিব-পার্বতীর বিরাট পাথরের মূর্তি ষোড়শপচারে পুজো হয় বছরে দু’টি দিন। শিব চতুর্দশী বা শিবরাত্রি এবং মহাষ্টমীতে। চণ্ডীর ধ্যানেই পুজো হয় হরগৌরী মূর্তির। অন্ন ভোগ, যজ্ঞ বা সন্ধি পুজো নেই।
হরিসভা মন্দিরের প্রধান বিবেকবন্ধু ব্রহ্মচারী বলছেন, ‘‘আমাদের অনুমান হরগৌরীর পুজো করে ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন মশাই তৎকালীন সময়ে বৈষ্ণবদের সঙ্গে শাক্ত এবং শৈবদের সমন্বয় সাধনের কাজটি করতে চেয়ে ছিলেন। কেননা চৈতন্যদেবের মূর্তি গড়িয়ে পুজোর প্রচলন করার জন্য তিনি রাজরোষে পড়েছিলেন। সেই কারণে তিনি বিভিন্ন মতের মানুষকে তাঁর পাশে চেয়েছিলেন।’’
Nabadwip Horisabha mondir harogouri
1





Thursday, June 22, 2017

SARADESWARI ASRAM RATH JATRA NABADWIP

🏯সারদেশ্বরী আশ্রমের রথ নবদ্বীপ🏯
১৯৫০ সাল থেকে নবদ্বীপের পথে নামে এক আশ্চর্য রথ। সারদেশ্বরী আশ্রমের রথ। নবদ্বীপ এ রথযাত্রায় একটি উল্লেখযোগ্য নাম সারদেশ্বরী আশ্রমের রথ ।এই রথযাত্রার সবটাই পরিচালনা করেন আশ্রমের সন্ন্যাসিনীরা, মানবসেবা যাদের জীবনের ব্রত। এমন রথ বিরল।
*******************************************
রথযাত্রা // রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রথযাত্রার দিন কাছে।
তাই রানী রাজাকে বললে, “চলো, রথ দেখতে যাই।”
রাজা বললে, “আচ্ছা।”
ঘোড়াশাল থেকে ঘোড়া বেরোল, হাতিশাল থেকে হাতি। ময়ূরপংখি যায় সারে সারে, আর বল্লম হাতে সারে সারে সিপাইসান্ত্রি। দাসদাসী দলে দলে পিছে পিছে চলল।
কেবল বাকি রইল একজন। রাজবাড়ির ঝাঁটার কাঠি কুড়িয়ে আনা তার কাজ।
সর্দার এসে দয়া করে তাকে বললে, “ওরে, তুই যাবি তো আয়।”
সে হাত জোড় করে বললে, “আমার যাওয়া ঘটবে না।”
রাজার কানে কথা উঠল, সবাই সঙ্গে যায়, কেবল সেই দুঃখীটা যায় না।
রাজা দয়া করে মন্ত্রীকে বললে, “ওকেও ডেকে নিয়ো।”
রাস্তার ধারে তার বাড়ি। হাতি যখন সেইখানে পৌঁছল মন্ত্রী তাকে ডেকে বললে, “ওরে দুঃখী, ঠাকুর দেখবি চল্‌।”
সে হাত জোড় করে বলল, “কত চলব। ঠাকুরের দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছই এমন সাধ্য কি আমার আছে।”
মন্ত্রী বললে, “ভয় কী রে তোর, রাজার সঙ্গে চলবি।”
সে বললে, “সর্বনাশ! রাজার পথ কি আমার পথ!”
মন্ত্রী বললে, “তবে তোর উপায়? তোর ভাগ্যে কি রথযাত্রা দেখা ঘটবে না।”
সে বললে, “ঘটবে বৈকি। ঠাকুর তো রথে করেই আমার দুয়ারে আসেন।”
মন্ত্রী হেসে উঠল। বললে, “তোর দুয়ারে রথের চিহ্ন কই।”
দুঃখী বললে, “তাঁর রথের চিহ্ন পড়ে না।”
মন্ত্রী বললে, “কেন বল্‌ তো।”
দুঃখী বললে, “তিনি যে আসেন পুষ্পকরথে।”
মন্ত্রী বললে, “কই রে সেই রথ।”
দুঃখী দেখিয়ে দিলে, তার দুয়ারের দুই পাশে দুটি সূর্যমুখী ফুটে আছে।
*******************************************
সারদেশ্বরী আশ্রম লিংক👇

https://m.facebook.com/story.php…
Rath rathjatra nabadwip Saradeswari ashram




Tuesday, June 20, 2017

NABADWIP PRACHIN MAYAPUR JAGANNATH BARI ASRAM BALAK SADHU

🌻 শ্রী জগন্নাথ বাড়ী আশ্রম নবদ্বীপ 🌻
নবদ্বীপের উত্তর সীমায় প্রাচীনমায়াপুরে বালসিদ্ধ মহাত্মা বালক সাধু পূর্বাশ্রমের যাদব চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেন জগন্নাথ বাড়ী আশ্রম । সদা বালক সুলভ হাস্য মুখ বালক সাধুর প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ দেবের নিত্য সেবা পূজা অর্চনা হয়। এই মন্দিরের রথ যাত্রার বিশেষ খ্যাতি আছে। রথযাত্রায় শ্রীবিগ্রহ নবদ্বীপ নিমাইয়ের জন্মস্থান মন্দিরে মাসির বাড়ি যায় এবং পুনযাত্রায় আশ্রমে ফিরে আসে। জগন্নাথ বাড়ির রথযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রাচীনমায়াপুর অঞ্চল উৎসবের আকার নেয়। রথ যাত্রা থেকে পুনযাত্রা পর্যন্ত এই সাতদিন উৎসব অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন হয়। রথ যাত্রার পাঁপড় জিলিপি , হরেক পসরা, রকমারি জিনিসের দোকান বসে।
এবছর নবদ্বীপ প্রাচীন মায়াপুরের রথযাত্রায় উপরি পাওনা নরহরি ধামের সুউচ্চ মহাপ্রভু দর্শন।
Jagannath bari asram Nabadwip









Nabadwip Sitanath Mondir


🌸 শ্রী শ্রী সীতানাথ মন্দির , নবদ্বীপ 🌸

নবদ্বীপ মহাপ্রভু পাড়ায় প্রাচীন শ্রী সীতানাথ মন্দির। মন্দিরে অদ্বৈত আচার্য ও আচার্য পত্নী সীতাদেবীর দারু বিগ্রহ মহাপ্রভু মন্দিরের সেবাইত দ্বারা নিত্য সেবিত। মন্দিরটি অদ্বৈত আচার্যের মন্দির নামেও পরিচিত। এই মন্দিরটি নবদ্বীপের মন্দির শৈলীর একটি প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন।

Adwaitya acharjya sitanath mondir Nabadwip



NABADWIP SRIBASANGAN JAGANNATH MANDIR

শ্রী জগন্নাথ মন্দির
নবদ্বীপ শ্রীবাস অঙ্গন ঘাটের কাছে বর্তমান শ্রী বাস অঙ্গন রোডে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে শ্রী যতীন্দ্র লাল রায় মহাশয় প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী জগন্নাথ মন্দির। মন্দিরে শ্রী জগন্নাথ দেবের সাথে নিতাই গৌর ও শীতলা মাতা পূজা হয়। উল্লেখ্য যতীন্দ্র লাল মহাশয় ই পোড়াঘাটে শীতলা মাতা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহ টি প্রাচীন। কথিত আছে পোড়াঘাটে জনৈক পান্ডার কাছে এই বিগ্রহ সেবাপুজো হতো, তিনি পরবর্তীতে সেবা কার্যে অপারগ হলে বিগ্রহ গঙ্গায় বিসর্জন দেবার মনস্থ করেন। পরে স্বপ্নাদেশে এই বিগ্রহ তিনি পোড়াঘাট স্থিত শীতলা মন্দিরের শ্রী যতীন্দ্র লাল রায় মহাশয় কে পূজার দায়িত্ব অর্পন করেন।
প্রতি বছর এই বিগ্রহ রথ যাত্রায় বের হন। আগে রথযাত্রার দিন পোড়ামাতালা থেকে আসবার পর মাসির বাড়ি হিসাবে সমাজ বাড়িতে রথ এবং বিগ্রহ অবস্থান করতো বর্তমানে পুনরায় যাত্রায় আগে পর্যন্ত শীতলা মন্দিরে মাসির বাড়ি হিসাবে বিগ্রহ অবস্থান করেন।

যতীন্দ্র লাল রায় মহাশয় এর দুই কন্যা আরাধনা সাহা ও পদ্মা কুন্ডুর তত্বাবধানে বর্তমানে মন্দিরের সেবাকার্য সম্পন্ন হয়।
Jagannath mondir Sribasangan Nabadwip



NABADWIP NRISHINGA MANDIR JAGANNATH DEB

🌻


নৃসিংহ মন্দিরের জগন্নাথ দেবের বিশেষ রূপ, নবদ্বীপ 🌻
শ্রী মূর্তির অসম্পূর্ণতায় শ্রীজগন্নাথদেব স্বপ্নে রাজা ইন্দ্রদুম্ন কে দর্শন দিয়ে জানালেন
"হে রাজন! কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি হস্তপদরহিত হলে, আমি আমার অপ্রাকৃত হস্ত-পদাদির সাহায্যে ভক্তের সেবা-উপকরণ গ্রহণ করি এবং ভুবনমঙ্গলরূপে সর্বত্র বিচরণ করি। কাজেই আমার শ্রীমূর্তির অসম্পূর্ণতা আমারই লীলা প্রকটনের একটি প্রমূর্তবিভাস।”
আমরা তাই জগন্নাথ দেবের এই রূপ বিগ্রহ দর্শন করি।

শ্রী ধাম নবদ্বীপ এ আমরা দেখতে পাই জগন্নাথদেবের এক অনন্য রূপ যা সাধারণত দেখা যায় না।
নবদ্বীপ নৃসিংহ মন্দিরে জগন্নাথদেব এর শ্রী মূর্তি হস্তপদ সম্পূর্ণতায় এক বিশেষ রূপ। বিগ্রহ টি প্রাচীন এবং এই বিশেষ রূপের অনেক গল্প শোনা যায়।
মন্দিরে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা ও রথযাত্রা উপলক্ষ্যে পূজা অর্চনার আয়োজন হয় তবে রথ যাত্রায় বিগ্রহ বের হয় না।
Nabadwip nrishinga mondir jagonnath
*********************************************
মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্ন শ্রীনীলমাধবের দর্শন না পেয়ে অনশনব্রত অবলম্বন করে প্রাণত্যাগের সঙ্কল্প করলে শ্রীজগন্নাথদেব তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বললেন,- “তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না। তুমি আমাকে দারুব্রহ্মরূপে পাবে। আমি সমুদ্রের চক্রতীর্থের সন্নিকটে ‘বাঙ্কিমুহান’ নামক স্থানে দারুব্রহ্মরূপে ভাসতে ভাসতে উপস্থিত হব। সেখান থেকে তুমি আমাকে তুলে আনবে।” স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে রাজা সৈন্যসামন্ত নিয়ে শ্রীদারুব্রহ্মকে উদ্ধার করতে গেলেন। সেখানে তিনি শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মকৃত শ্রীদারুব্রহ্মকে দর্শন করলেন। রাজা বলবান্ লোক ও হস্তির বল দিয়েও দারুব্রহ্মকে এতটুকু বিচলিত করতে পারলেন না। শ্রীজগন্নাথদেব রাজাকে স্বপ্নে আবার দর্শন দিয়ে জানালেন, পূর্বে যে সেবক নীলমাধবের পূজো করতেন তাঁকে এখানে আনয়ন করে একটি সুবর্ণ রথ দারুব্রহ্মের সম্মুখে স্থাপন করতে হবে।
স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী নীলমাধবের ভক্তদের আনা হল। বিশ্বাবসু শ্রীদারুব্রহ্মের একপার্শ্বে ও বিদ্যাপতি ব্রাহ্মণ অন্যপার্শ্বে ধারণ করলেন। চতুর্দিকে চলল হরিনাম সংকীর্তন। রাজা দারুব্রহ্মকে স্পর্শ করে তাঁকে রথারোহণ করতে প্রার্থনা করতে লাগলেন। দারুব্রহ্ম রথারোহণ করলেন। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন রথখানিকে যথাস্থানে নিয়ে আসলেন। ব্রহ্মা এস্থানে যজ্ঞ আরম্ভ করলেন; শ্রীনৃসিংহদেব যজ্ঞবেদীতে অবস্থান করলেন। কথিত আছে যে যেখানে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানেই বর্তমান শ্রীমন্দির অবস্থিত। এই মণ্ডপের পশ্চিমদিকে যে নৃসিংহদেব বিরাজমান আছেন, তিনিই ‘আদি নৃসিংহদেব’।
রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন দারুব্রহ্মকে শ্রীমূর্তিরূপে প্রকট করার জন্য সুদক্ষ কারিগর আহ্বান করলেন; কিন্তু, কেউ দারুব্রহ্মকে স্পর্শ করতে পারলেন না, তাঁদের হাতুরী-বাটাল খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেল। অবশেষে যাঁর মূর্তি প্রকট হবে তিনিই স্বকৃপায় ‘অনন্ত মহারাণা’ নামে আত্মপরিচয় দিয়ে বৃদ্ধ শিল্পীর ছদ্মাবরণ নিয়ে ২১ দিবসের মধ্যে শ্রীবিগ্রহ প্রকট করার আশ্বাস প্রদান করলেন। তিনি জানালেন ঐ ২১ দিন তিনি একটি রুদ্ধ গৃহে অবস্থান করে শ্রীমূর্তি তৈরী করবেন। নির্ধারিত সময়ের আগে কেউ দ্বার উন্মোচন করতে পারবেন না বলেও তিনি জানান। ঐ বৃদ্ধ শিল্পীর উপদেশানুযায়ী রাজা পূর্বে আহুত কারিগর দিয়ে তিনটি রথ তৈরী করে রাখলেন। দেখতে দেখতে ১৫ দিন গত হয়ে গেল। নিভৃতকক্ষে কারিগরের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে রাজা বৃদ্ধ মন্ত্রীর নিষেধ উপেক্ষা করে রাণীর পরামর্শক্রমে মন্দিরের দ্বার উন্মোচন করলেন। কিন্তু সেখানে বৃদ্ধ কারিগরকে আর দেখা গেল না। নিভৃত কক্ষের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা গেল অসম্পূর্ণ তিনটি মূর্তি। শ্রীমূর্তির শ্রীহস্তের অঙ্গুলিসমূহ ও শ্রীপাদপদ্ম অপ্রকাশিত ছিল। বৃদ্ধ মন্ত্রী রাজাকে জানালেন যে ঐ কারিগর আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং শ্রীজগন্নাথদেব,আপনার মূর্তি আপনিই গড়তে তিনি বৃদ্ধ ‘অনন্ত-মহারাণা’রূপ ধরে এসেছিলেন। রাজা প্রতিজ্ঞা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীজগন্নাথদেব অসম্পূর্ণ মূর্তিরূপে প্রকট হয়েছেন। রাজা নিজেকে অপরাধী মনে করে প্রাণত্যাগ করার সঙ্কল্প করলে শ্রীজগন্নাথদেব স্বপ্নে রাজাকে দর্শন দিয়ে জানালেন,- “হে রাজন! কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি এইরূপ দারুব্রহ্ম আকারেই ‘শ্রীপুরুষোত্তম’ নামে নীলাচলে নিত্য অধিষ্ঠিত আছি। আমি এই প্রপঞ্চে আমার শ্রীধামের সাথে ২৪টি অর্চা অবতাররূপে অবতীর্ণ হই। আমি হস্তপদরহিত হলে, আমি আমার অপ্রাকৃত হস্ত-পদাদির সাহায্যে ভক্তের সেবা-উপকরণ গ্রহণ করি এবং ভুবনমঙ্গলরূপে সর্বত্র বিচরণ করি। কাজেই আমার শ্রীমূর্তির অসম্পূর্ণতা আমারই লীলা প্রকটনের একটি প্রমূর্তবিভাস।”
নীলাচল নিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে৷
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ।।